Search
Close this search box.
রম্য

বেহেশতে দেবুদার মনটা ক্রমেই বিষিয়ে উঠতে থাকে। কারণ গোবরডাঙ্গা ও শিয়ালনগরের সাধুবাবা ও পীরসাহেব বড় রকমের বাড়াবাড়ি শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর গৃহকর্মী মুশতাক আর গান্ধীজীর আশ্রমকর্মী নাত্থুরাম গডসের নিয়মিত যাতায়াত গোবরডাঙ্গা ও শিয়ালনগরে। মুশতাক গিয়ে মন্দির ভাঙ্গার উস্কানি দিয়ে আসে; গডসে গিয়ে গোরু জবাই বন্ধের বুদ্ধি দিয়ে আসে স্ব স্ব গোত্রে। সেই যে এক হিন্দু-মুসলমান কচলানির বদ-অভ্যাস এতো দূর হবার নয় ভারতবর্ষের বেহেশতবাসীদের। ফলে বেহেশতটাকে নরক বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে মুশতাক-গডসে চক্রটা। এরা মাঝে মাঝে দোজখে গিয়ে জামাত-আর এস এস-এর প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আসে। বেহেশতের পরিবেশটা কী করে হুবহু দক্ষিণ এশিয়ার মত বর্জ্য-ঝুড়িতে পরিণত করা যায়; সেই লক্ষ্যে তাদের এতো আয়োজন।

শান্তিনিকেতনে যাবার পথটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। গোবরডাঙ্গা এবং শিয়ালনগরের লোকেদের নারী দেখলেই জিভ লক লক করে। একটি-দুটি ধর্ষণ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে বেহেশতের পুলিশ বিভাগের সহায়তায়। ভাগ্যিস এরা দক্ষিণ এশিয়ার পুলিশ নয়; নইলে এরি মাঝে অঘটন ঘটে যেত। দক্ষিণ এশিয়ার পুলিশ কাজের চেয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদলিপিটা খুব সুন্দর লিখতে শিখেছে; আর কিছুই যে শেখেনি। দেবুদা বেহেশতের পুলিশেরা খুব ভালো এমন একটি সন্তোষ নিয়ে কফিতে চুমুক দিতেই খবর আসে, চুনিলাল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে; নারী পাচারকারী হিসেবে। তাজ্জব ব্যাপার চুনিলাল এবং নারী পাচার-তা আবার বেহেশতে।

শিয়ালনগর ও গোবরডাঙ্গায় গুজব রটে যায় চুনিলাল বেহেশত থেকে চারটে হুর দোজখে পাচারের চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েছে। পুলিশস্টেশানে গিয়ে দেবুদা দেখে, পার্বতী-চন্দ্রমুখী-লায়লা-জুলিয়েট আর চুনিলাল মুখ পাংশু করে বসে আছে। চুনিলালের ট্যাক্সিতে চারজন একটু লং-ড্রাইভে গিয়েছিলো। বেহেশতের পুলিশের সেটাকে নারী পাচার মনে হয়েছে। দেবুদা মনে মনে ভাবে, পুলিশ পুলিশই; তা সে বেহেশতেরই হোক বা ঢাকার রামপুরারই হোক। রামপুরা থেকে পুলিশ চারজন স্বেচ্ছাসেবীকে গ্রেফতার করেছে শিশু পাচারকারী হিসেবে। অথচ স্বেচ্ছাসেবীরা অধিকার বঞ্চিত শিশুদের স্কুল চালাতো। চুনিলালেরও একই অবস্থা বেহেশতের পুলিশের হাতে। চুনিলালকে তারা রিমান্ডে নিয়ে যাচ্ছে; জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। দেবুদার সঙ্গে চোখ গরম করে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলে, আপনি আমাদের কাজে ইন্টারফেয়ার করবেন না। আমি আইন-কানুন আপনার চেয়ে বেশী জানি।

দেবুদার কাছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফোন আসে, খুব বাজে ঘটনা ঘটে গেছে দেবু। শান্তি নিকেতনের টিউশান ফি’র ওপর ভ্যাট আরোপিত হয়েছে। শিক্ষার ওপর ভ্যাট; এ কেমন কথা! ছাত্ররা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। তবে শিয়ালনগরের কিছু সন্ত্রাসী ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে। তারা তো চায় শান্তিনিকেতন বন্ধ হয়ে যাক। সবাই শিয়ালনগরের বা গোবরডাঙ্গার লোকের মত অশিক্ষিত হয়ে থাকুক। কিছু একটা করা দরকার দেবু।

ছোট্ট ছেলেটির মন খারাপ। খুব বেশিই খারাপ। পরীক্ষায় একটি প্রশ্নের উত্তরে সে শূন্য পেয়েছে।

প্রশ্নটি ছিলো এরকম, ‘ব্যারোমিটারের সাহায্যে একটি ভবনের উচ্চতা কীভাবে মাপা সম্ভব?’ উত্তরটি তার জানা ছিল না। তাই বলে তো আর প্রশ্ন ছেড়ে আসা যাবে না। মা বারবার বলে দিয়েছে ‘ফুল অ্যান্সার’ করে আসার জন্য। তাই বুদ্ধি খাটিয়ে সে লিখেছিল, ‘দড়ি বেঁধে ভবনের ছাদ থেকে ব্যারোমিটারটি নিচে ফেলে দিতে হবে। তাহলে ঐ দড়ির দৈর্ঘ্যই হবে ভবনের উচ্চতা’।

শিক্ষক ঊত্তর দেখে খুশি তো হনইনি, বরং ভেবেছেন ছেলেটি দুষ্টমি করে উত্তরটি লিখেছে। তাই তাকে ডেকে খাতাটা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘ধরে নিলাম উত্তরটা তুমি জান, দ্বিতীয়বার তোমায় সুযোগ দিচ্ছি, চটপট উত্তরটা লিখে ফেল।’ ছেলেটি ভাবল, ‘এবার আর ভুল করা যাবে না।’ তাই এবার সে লিখল, ‘আমি ভবনের উপর থেকে নেমে এসে ভবনের অ্যাটেনডেন্টকে বলব, ভবনের প্রকৃত উচ্চতাটি বললে আমি তোমাকে এই ব্যারোমিটারটি উপহার দেব। তখন সে বলে দেবে আর আমি জেনে নেব।’

এবার হয়েছে,এবার নম্বর না দিয়ে শিক্ষক যাবেন কোথায়? এই ভেবে মনে মনে এক চোট হেসে নিলো ছেলেটি।

কিন্তু তার উত্তর দেখে এবার আর শিক্ষকও ভুল করলেন না। দিয়ে দিলেন পুরো শূন্য (0)!

পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্নে ভুল করলেও পরবর্তীতে সেই ছেলেটিই হয়ে ওঠে, ‘বোর পরমাণু মডেলের’ জনক প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী নীলস বোর।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকার থেকে এক গ্রাহকের ১৪৯ ভরি স্বর্ণ চুরি যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই বিস্মিত হলেও অল্টারনেট প্ল্যান নিয়ে এসেছেন জেন-জি নেটিজেনরা। চলুন জেনে আসি গায়েব হয়ে যাওয়ার জন্য আর কী কী রাখা যেতে পারে ইসলামী ব্যাংকের লকারে…

এনজাইটি ও ডিপ্রেশন: মানুষের জীবনে দুশ্চিন্তা এবং হতাশার শেষ নেই। এনজাইটির প্রথম টার্গেট আমাদের বাবা-মায়েরা হলেও ডিপ্রেশনের প্রথম টার্গেট আমরা। বয়স হওয়ার সাথে সাথে এটি ঝাঁপিয়ে পড়ে সকলের ওপর। সময় সুযোগ মতো যদি সব এনজাইটি এবং ডিপ্রেশন একত্র করে ইসলামী ব্যাংকের লকারে রাখতে পারেন, কল্পনা করতে পারেন কত সুন্দর একটি পৃথিবী অপেক্ষা করছে আপনার জন্য?

ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স: জীবনের কোনো না কোনো জায়গায় গিয়ে ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগেন শতকরা শতভাগ মানুষ। এর প্রভাব পড়ে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবন পর্যন্ত। ইসলামী ব্যাংকের লকারে এনজাইটি কিংবা ডিপ্রেশনের মতো বাক্সবন্দী করে রাখা যায় ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সকেও।

প্রাক্তন প্রেমিক প্রেমিকার স্মৃতি: অবিশ্বস্ত এক সূত্র মতে, ৭৭% মানুষ এক জীবনে তাদের এক্সের কথা ভুলতে পারে না, তা যত ভালো কিংবা খারাপ স্মৃতিই হোক না কেন। শুধু তাই নয়, ৪০% মানুষ তার প্রাক্তনের কথা ভেবে আঁতকে ওঠেন রাতে। এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে ইসলামি ব্যাংকের লকারে রাখতে পারেন আপনার এক্সদের মেমোরিও। শুধু তাই নয়, পাস্ট ট্রমার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।

ভয় এবং রাগ: ভয় এবং রাগ মানুষের জীবনের অত্যন্ত পরিচিত দুই অনুভূতি। অনেকেই অল্পতে রেগে যান কিংবা ভয় পান। রাগ বা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে এমন সব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যা পরবর্তীতে খাল কেটে কুমির আনার মতো হয়।

এসব ক্ষেত্রে রাগ এবং ভয়কে আপনি লকারে ভরে গায়েব করে দেওয়ার আশা করতেই পারেন!

ক্রাশ: ক্রাশ খাওয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। তবে ঘন ঘন এবং গভীর ক্রাশ থেকে বাঁচতে ইসলামী ব্যাংক হতে পারে আপনার সেভিওর। ক্রাশের নাম, ঠিকানা, ছবি এবং তার প্রতি আপনার অনুভূতি লিখে জমা দিয়েন আসুন ইসলামী ব্যাংকে। দেখবেন সেখান থেকে রাতারাতি গায়েব হয়ে গিয়েছে আপনার ঝামেলা।

স্যাটায়ার
সঙবাদ
সঙবাদ